চলতি বছরে ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ১২ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত একটি সরকারি হাসপাতাল, যেখানে চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিচ্ছেন। একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু—ডেঙ্গুতে আতঙ্কিত রাজধানীসহ সারাদেশ। ছবি সংগ্রহীত

অনলঅইন ডেস্ক:

ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর:
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৪০ জন রোগী।

এটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।


বিভাগভিত্তিক আক্রান্তের সংখ্যা

স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে:

  • বরিশাল বিভাগে: ১৬৫ জন
  • চট্টগ্রাম বিভাগে: ৭৭ জন
  • ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে): ১৪৭ জন
  • ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে: ১২২ জন
  • ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে: ১১৫ জন
  • খুলনা বিভাগে: ৫২ জন
  • ময়মনসিংহ বিভাগে: ২২ জন
  • রাজশাহী বিভাগে: ২৮ জন
  • রংপুর বিভাগে: ৩ জন
  • সিলেট বিভাগে: ৯ জন

এই পরিসংখ্যান স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে ঢাকাসহ সারাদেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।


স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। মশার প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট করা, ঘরে-বাইরে জমে থাকা পানিকে সরানো এবং নিয়মিত মশা নিধন কর্মসূচি গ্রহণ জরুরি।

তাদের মতে, হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপরও চাপ তৈরি হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


চলতি বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি

২০২৫ সালের শুরু থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর বিস্তার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের চেয়েও ছাড়িয়ে যেতে পারে।


প্রতিরোধই মূল উপায়

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামাজিক উদ্যোগের বিকল্প নেই। নিয়মিত বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখা, ফুলের টব, ড্রাম বা টায়ারে জমে থাকা পানি অপসারণ করা, মশারি ব্যবহার করা এবং প্রয়োজন হলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে মশা নিধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

সরকারের পক্ষ থেকেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও, কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সচেতনতা অপরিহার্য বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *