অনলাইন ডেস্ক:
দিনাজপুর, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ :
নারীদের স্তন ও জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দিনাজপুরে এক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সদর উপজেলার চেরাডাঙ্গী স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার (বিসিআরসি)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে চিকিৎসক, গবেষক এবং শিক্ষাবিদরা অংশ নেন।
সেমিনারের সভাপতিত্ব ও প্রবন্ধ উপস্থাপন
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেরাডাঙ্গী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিসিআরসি দিনাজপুর জেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ জামিরুল ইসলাম জুয়েল।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আলোচনা
সেমিনারে বক্তব্য দেন বিসিআরসি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুর রহমান তরুণ, বিসিআরসি জেলা শাখার সভাপতি ডা. মো. হাফিজুল ইসলাম, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. শারমীন আক্তার সুমী, ব্রেইন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও নিউরোসার্জন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সারোয়ার মোর্শেদ আলম, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মহিবুর রহমান নিরব এবং দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগীয় প্রধান সমিরন কুণ্ডু।
তারা বলেন, বাংলাদেশের নারীরা স্তন ক্যান্সার ও জরায়ু মুখের ক্যান্সারের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। প্রতি বছর হাজার হাজার নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন।
পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার ৬৮৬ জন নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ৩৬২ জন মারা যান। এছাড়া ৫ কোটির বেশি নারী এ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
প্রতিরোধ ও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। নারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। একই সঙ্গে কিশোরীদের জন্য জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধী ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকরী। সরকার ইতোমধ্যে বিনামূল্যে এই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রত্যেক নারীর এ টিকা নেওয়া উচিত বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
জনসচেতনতার আহ্বান
সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গ্রামীণ পর্যায় থেকে শুরু করে শহর পর্যন্ত নারীদের মধ্যে ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তারা পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনকে যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
উপসংহার
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে, ক্যান্সার প্রতিরোধে শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়, সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা অপরিহার্য। নারীদের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন।
