বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ কোম্পানির নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

অনলাইন ডেস্ক:

নিউইয়র্ক, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে নতুন করে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার নিউইয়র্কে আয়োজিত “যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিল” আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিনিয়োগের নতুন সুযোগ

ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (USBBC) আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মূল বিষয় ছিল “অ্যাডভান্সিং রিফর্ম, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড গ্রোথ”। প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে মেটলাইফ, শেভরন এবং এক্সেলারেট এনার্জিসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ সুযোগ কাজে লাগাতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগোচ্ছে। অবকাঠামো, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও শিল্পখাতে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য।”

রাজনৈতিক নেতাদের পরিচিতি

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম পরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ড. ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসা বাংলাদেশের ছয়জন রাজনৈতিক নেতাও সভায় উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

এর ফলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও ব্যবসায়ী মহলের মধ্যে একটি টেকসই সম্পর্ক গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বৈশ্বিক বার্তা

ড. ইউনূস সভায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং জ্বালানি সমস্যার মাঝেও এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য একটি স্থিতিশীল ও সম্ভাবনাময় গন্তব্য। সংস্কার ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে মার্কিন কোম্পানিগুলোর নতুন বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এছাড়া তিনি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

পরিশেষে:

এই বৈঠক শুধু ব্যবসায়িক নয়, বরং কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা যেমন বিনিয়োগ আহ্বান করেছেন, তেমনি রাজনৈতিক নেতাদের সামনে এনে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী মহলের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও অগ্রগতির বার্তাও তুলে ধরেছেন।

বাংলাদেশ এখন এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে মার্কিন কোম্পানিগুলোর সরাসরি বিনিয়োগ শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *