সংস্কারপ্রক্রিয়ার নিজেরই সংস্কার প্রয়োজন: বিএনপি নেতা মঈন খান

বিএনপি নেতা মঈন খান সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে মন্তব্য করছেন চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়ায় স্থবিরতা কাটাতে এরই সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান, ছবি সংগ্রহীত

অনলাইন ডেস্ক:

চলমান প্রক্রিয়ায় হতাশা প্রকাশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান মন্তব্য করেছেন যে, চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়ার নিজস্ব কাঠামোতেই সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। তার মতে, এক বছর ধরে প্রক্রিয়াটি চললেও বাস্তব কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। মূল সমস্যা হলো কমিশন এখনও প্রথাগত পদ্ধতি থেকে বের হতে পারছে না, যার ফলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

সংলাপে বক্তব্য

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মঈন খান বলেন, “আমাদের ওপর জোর করে একনায়কতন্ত্র চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন বাংলাদেশে সবাই একইভাবে চিন্তা করবে এবং ভিন্নমত থাকবে না।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন—“আজও কি সবাইকে একমত করিয়ে গণতন্ত্র উদ্যাপন করা হবে? আমি এ ধারণায় বিশ্বাস করি না।”

ভিন্নমতের গুরুত্ব

মঈন খান বলেন, ভিন্নমত গণতন্ত্রের একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। তিনি উল্লেখ করেন, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিষয়ে ইতিমধ্যেই মতৈক্য হয়েছে, তবে কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকা অস্বাভাবিক নয়। তার ভাষায়, “যদি সব বিষয়ে হুবহু একমত হয়ে যাই, তবে সেটাই হবে অস্বাভাবিক।”

তিনি ইংরেজি প্রবাদ “Unity in Diversity” (বৈচিত্র্যেই ঐক্য) উল্লেখ করে বলেন, জোর করে সংবিধান পরিবর্তন বা চুক্তি চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পরিবর্তন হলে তা আসবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই।

আগস্ট বিপ্লব প্রসঙ্গ

তিনি আরও বলেন, যদি এ প্রশ্নগুলো আগস্ট বিপ্লবের আগে উঠত, তাহলে দেশের মানুষ ভিন্নভাবে চিন্তা করত। বাংলাদেশের জনগণ আবেগপ্রবণ ও অধৈর্য—এই দুই বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা

মঈন খানের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত জনগণের ওপর আস্থা রাখা। তবে আস্থাটা হতে হবে পারস্পরিক। তিনি বলেন, সরকার প্রথাগত ধারা অনুসরণ করায় এখনো সমাধান আসেনি। এজন্য তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সংস্কারপ্রক্রিয়ার নিজেরই সংস্কার প্রয়োজন।”

রাজনৈতিক দলের জন্য বার্তা

তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বলেন, দ্বন্দ্ব নয়, বরং মতভেদ থাকা সত্ত্বেও সামনাসামনি আলোচনা প্রয়োজন। পারস্পরিক আস্থা ছাড়া কোনো সংস্কার কার্যকর হবে না।

আলোচনায় উপস্থিতরা

আলোচনায় নিরাপত্তা বিশ্লেষক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। সিজিএসের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *