অনলাইন ডেস্ক:
ঢাকা, ৩১ আগস্ট:
নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “পুলিশ অ্যাকটিভ হলে তখন সবাই বলে তারা বেশি করে ফেলেছে। অথচ নিয়ম হচ্ছে আগেই অ্যাকশনে যাওয়া।”
জাতীয় পার্টির অফিসে আগুন ধরানোর পর পুলিশ বাধা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এমন ঘটনা ঘটার আগেই যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হতো, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি আরও কমানো যেত। কিন্তু যখন পুলিশ অ্যাকশন নেয়, তখন সমালোচনা শুরু হয়।”
নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। “যে দলের কার্যকলাপ নেই, তারা চাইবে নির্বাচন না হোক। কিন্তু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা প্রতিহত করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দল, জনগণ, সবার।”
তিনি আরও যোগ করেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা জরুরি। ঐক্যের অভাব হলে সুযোগসন্ধানীরা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
আন্দোলন ও অবরোধের চিত্র
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় ১ হাজার ৬০৪টি অবরোধ হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। এসব অবরোধ করেছে ১২৩টি সংগঠন। তিনি বলেন, “রাস্তা অবরোধ না করে মাঠ বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে পারে। এতে জনদুর্ভোগ ও যানজট কমে যাবে।”
তিনি চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক ঘটনার কথাও উল্লেখ করে বলেন, “আমরা চাই ধীরে ধীরে এগুলো কমে আসুক। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার।”
রাজনৈতিক ঐক্যের গুরুত্ব
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মনে করেন, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য। “ঐক্যে ফাটল ধরলে অরাজকতা তৈরি হয়। এ সুযোগে দোসররা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তোলে,” বলেন তিনি।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, পুলিশকে সময়মতো অ্যাকশন নিতে হবে এবং জননিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে সেই অ্যাকশন নিয়ে সমালোচনা না করে সহযোগিতা করা উচিত।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বক্তব্যে স্পষ্ট যে, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার কঠোর অবস্থানে যেতে চায়। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে জনগণের সমর্থন চেয়েছেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখতে রাজনৈতিক দল, জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত ভূমিকা জরুরি। সামনে নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা-ই এখন সময়ের বড় প্রশ্ন।
