অনলাইন ডেস্ক:
ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ – দেশের রাজধানী সহ পার্শ্ববর্তী দুই জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপত্তা জোরদারের উদ্দেশ্যে ১৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সকালের দিকে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর শরিফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
মোতায়েনের পরিমাণ ও এলাকা
তিনি জানান, রাজধানী ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী জেলায় — নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অতিরিক্ত ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
মোতায়েনের কারণ ও কার্যক্রম
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিস, আদালত প্রাঙ্গণ, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও তাদের আশেপাশের এলাকায়। মোড়গুলোতে টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে যেকোনো অপ্রত্যাশিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা দ্রুত সনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, এই উদ্যোগ সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে একটি সক্রিয় প্রস্তুতি। সামগ্রিকভাবে যাতে কোনো ‘নাশকতামূলক’ ঘটনা বা বৃহত্তর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে না পারে — তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দিনের বেলা থেকে সার্বিক সমন্বয় ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সমন্বয় সভা ও প্রস্তুতি
সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এক প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভায় মিলিত হয়েছেন। সভায় সম্প্রতি তৈরি নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং মোতায়েনের জন্য প্রয়োজনীয় বাহিনী বরাদ্দ করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার প্রেক্ষাপট
এই মোতায়েন অভিযানের সময় চিহ্নিত করা হয়েছে আগামীকাল হওয়ার কথা রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ের ঘোষণা — আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হবে। এই রায়ের ঘোষণার দিকে নজর রেখে সম্ভাব্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট দলগুলো আরও প্রস্তুত হয়েছে।
সাধারণ মানুষ ও জনসাধারণের ভূমিকা
নিরাপত্তা বাহিনী সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছে যে, তারা সন্দেহভাজন পরিস্থিতি দেখলে প্রশাসন বা আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করবে। পাশাপাশি, সড়ক বা জনবহুল এলাকায় আনভীরল (unruly) কর্মকাণ্ড দেখা গেলে তা দ্রুত বন্ধ করার প্রস্তুতি রয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
ন্যূনতম বিশ্লেষণে বলা যেতে পারে, এই ধরনের মোতায়েন সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং উদ্বেগের সময় দ্রুতসাড়া দেওয়া সম্ভব করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রাজধানীতে জনসংখ্যা ঘনত্ব বেশি, নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও অধিক — সেই কারণে সরকারি অফিস, আদালত, গুরুত্বপূর্ণ মোড়সহ জনবহুল এলাকা আপাতত বিশেষ নজরে রাখা হয়েছে।
অনেক সময় মাইক্রো–ক্রাইম বা বিশৃঙ্খলা বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকিতে রূপ নিতে পারে; তাই প্রশাসনের এই আগাম প্রস্তুতি প্রশংসনীয়। তবে জনসাধারণের সচেতনতা, আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক সমন্বয় ও পরিবেশ বান্ধব টহলই কোনো ঘটনার প্রবণতা কমাতে সবচেয়ে কার্যকর।
শেষ কথা
বর্তমানে যার নামান্তর হচ্ছে — সাধারণ নিরাপত্তা নয়, সক্রিয় নজরদারি ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া। আগামীকাল রায়ের ঘোষণার প্রেক্ষাপটে রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী জেলা—নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরে এই প্রস্তুতি একান্ত জরুরি মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সমাজের প্রতিটি স্তরের সচেতনতা ও আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেশাদারিত্ব একসঙ্গে থাকলে চলমান শান্তি আরো নিশ্চিত করা সম্ভব।
সবার প্রতি অনুরোধ — নিরাপত্তার প্রতি সাধারণ দায়িত্বশীল হোন, জরুরি অবস্থায় আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করুন, এবং সন্দেহভাজন বা অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নজরে এলে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কাজে হস্তক্ষেপ করুন।
