অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম নতুন করে ২ হাজার ৭১৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে নতুন দাম দাঁড়িয়েছে ভরিতে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৫০ টাকা—যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নতুন এই দাম কার্যকর হবে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে।
দামের নতুন তালিকা (ভরি প্রতি):
- ২২ ক্যারেট: ১,৮১,৫৫০ টাকা
- ২১ ক্যারেট: ১,৭৩,৩০৪ টাকা
- ১৮ ক্যারেট: ১,৪৮,৫৪১ টাকা
- সনাতন পদ্ধতি: ১,২৩,০৬৭ টাকা
দাম বাড়ানোর কারণ
বাজুস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশীয় বাজারেও সমন্বয় আনা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যোগ করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরি ভিন্ন হতে পারে।
রুপার দাম অপরিবর্তিত
যেখানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে, সেখানে রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বর্তমানে বাজারে:
- ২২ ক্যারেট রুপা: ভরিতে ২,৮১১ টাকা
- ২১ ক্যারেট রুপা: ভরিতে ২,৬৮৩ টাকা
- ১৮ ক্যারেট রুপা: ভরিতে ২,২৯৮ টাকা
- সনাতন পদ্ধতি রুপা: ভরিতে ১,৭২৬ টাকা
স্বর্ণের দামের ইতিহাস: এক নজরে
- ৩ সেপ্টেম্বর: ভরিতে ৩,০৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। তখন ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা।
- ৭ সেপ্টেম্বর: আবারও দাম বেড়ে ভরিতে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৫০ টাকা হয়।
অর্থাৎ, মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে ভরিতে দাম বেড়েছে প্রায় ৫,৭৬২ টাকা।
বারবার সমন্বয়
এ নিয়ে চলতি বছর মোট ৫০ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো। এর মধ্যে ৩৪ বার দাম বেড়েছে, আর কমেছে ১৬ বার।
২০২৪ সালে মোট ৬২ বার দাম সমন্বয় হয়েছিল, যেখানে ৩৫ বার দাম বেড়েছিল এবং ২৭ বার কমানো হয়েছিল।
এত ঘন ঘন পরিবর্তন দেশের বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের জন্য এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
স্বর্ণের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে স্বর্ণ কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের অস্থিরতা থাকায় তারা বাধ্য হয়ে দাম সমন্বয় করছেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণের দামে আবারও রেকর্ড হলো। চলতি বছর প্রায় প্রতিমাসেই দাম ওঠানামা করছে। ক্রেতারা যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সেখানে ব্যবসায়ীরা বলছেন বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ছাড়া বিকল্প নেই।
আগামী দিনে আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল হলে হয়তো দেশে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এই মূল্যবান ধাতু।
