রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াতের প্রধান সড়ক ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আজ শনিবার সকালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। চারটি যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
দুর্ঘটনার সময় ও স্থান
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট সবুজ মিঞা জানান, ফরিদপুর থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারে উঠে যায়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং অন্তত পাঁচজন যাত্রী আহত হন।
পরবর্তী সংঘর্ষ
প্রথম দুর্ঘটনার পরই পেছনে আসা আরও তিনটি যাত্রীবাহী বাস গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে আরও প্রায় ২০ জন যাত্রী আহত হন। একের পর এক ধাক্কায় চারটি বাসই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং মুহূর্তেই ঘটনাস্থল অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে। পরে তাদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
যান চলাচল বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম
ঘটনার পর এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকামুখী লেন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা দুর্ঘটনাকবলিত বাসগুলো সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথম বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে উঠার পরপরই অন্য তিনটি বাস এত দ্রুত ধাক্কা দেয় যে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়। যাত্রীরা চিৎকার করতে থাকেন এবং অনেকে জানালা ভেঙে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করেন।
সড়ক দুর্ঘটনার শঙ্কা
দ্রুতগামী যানবাহন, বেপরোয়া চালনা ও সড়কে অনিয়মিত গতি নিয়ন্ত্রণের কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা সড়কে পুলিশি টহল ও চালকদের সচেতনতার ওপর জোর দিয়েছেন।
উপসংহার
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের এই দুর্ঘটনা আবারও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আহতদের চিকিৎসা চলছে এবং পুলিশ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
