আন্তর্জাতিক অনলাইন ডেস্ক:
দিল্লির লালকেল্লা সংলগ্ন বিস্ফোরণ ঘটনায় সন্দেহভাজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী হিসেবে পরিচিত হয়েছেন একজন চিকিৎসক—ডা. উমর মোহাম্মদ। সাদা হুন্দাই আই২০ গাড়িতে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় পার্কিং-এ রাখা অবস্থায় থাকা এই গাড়ি থেকেই সোমবার সন্ধ্যায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার ফলে কমপক্ষে ৯ জন নিহত ও আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনা সংক্ষেপ
সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি সাদা হুন্দাই আই২০ গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এই গাড়িটি বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে পার্ক করা হয় এবং বিকেল ৬টা ৩০ মিনিটেরও আগে তা থেকে বেরিয়ে যায়—প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় এলাকায় পার্কিং-বিহীন অবস্থায় ছিল। সূত্র বলছে, গাড়িটি একাধিকবার হাতবদল হয়েছে এবং অবশেষে উদ্দিষ্ট হামলাকারীর কাছে পৌঁছে যায়।
ঘটনায় অভিযুক্ত ডা. উমর ১৯৮৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি আল ফালাহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আরও দুই চিকিৎসক—ডা. আদিল আহমেদ রাঠ ও ডা. মুজাম্মিল শাকিল—এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগীতার মধ্যে ছিলেন। উদ্ধার তথ্য অনুযায়ী, ওই দুই চিকিৎসককে জম্মু ও কাশ্মীর ও হরিয়ানার পুলিশ দল ‘বিস্ফোরক দ্রব্য রাখার’ অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের খবর পেয়ে ফরিদাবাদ থেকে পালিয়ে যান ডা. উমর, পরে আতঙ্কিত হয়ে এই হামলা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট আগে মুখোশধারী এক ব্যক্তি ওই গাড়ি চালিয়ে এলেন এবং জানালায় হাত রেখে পার্কিং লটে গাড়ি প্রবেশ করান—গাড়ি থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও বের হননি। এই আচরণ দেখে মনে করা হচ্ছে তিনি কারোর নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন অথবা গাড়ি পার্ক করার পর যোগাযোগ রক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
এই হামলাটি এখন “সন্ত্রাসী হামলা” হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। ফরেনসিক প্রমাণ ও গোয়েন্দা তথ্যে সন্ত্রাসী যোগসূত্র পাওয়ার পর দিল্লি ও আশপাশের রাজ্য়গুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বিস্ফোরণের রূপ ও পরিণতি
সন্ধ্যার সময় কেন্দ্রীয় ওয়ালকান এলাকায় ঘটে যাওয়ার কারণে বিস্ফোরণের ধ্বংসলীলায় ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ, ভাঙা গাড়ি ও আতঙ্কিত সাধারণ লোকজনের চিৎকার-চৈত্য দেখা গেছে। উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে নিয়েছে এবং আহতদের দ্রুত হাসপাতালে منتقل করা হয়েছে।
এটির ভূমিকায় চোখ দিলে দেখা যায়—হাতবদল করা গাড়িটি পার্কিং-লটে দীর্ঘ সময় ধরে ছিল; এতে হামলাকারীকে সময় ও সুযোগ পেয়েছে। এমনকি দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি গাড়ি থেকে—এটির মানে তিনি হয়তো সরাসরি নির্দেশে কাজ করছিলেন বা কারোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
সন্দেহভাজন ও তার বাড়তি তথ্য
- ডা. উমর মোহাম্মদ: ১৯৮৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় জন্ম।
- কর্মস্থান: আল ফালাহ মেডিকেল কলেজ।
- সহকারী হিসেবে ছিলেন: ডা. আদিল আহমেদ রাঠ ও ডা. মুজাম্মিল শাকিল।
- অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক গ্রেফতার: বিস্ফোরক সংরক্ষণ অভিযোগে।
- পালিয়ে যাওয়ার পর হামলা: ফরিদাবাদ থেকে।
- গাড়িতে ডেটোনেটর স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল।
এই সমস্ত তথ্য গোয়েন্দা সূত্র ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নিরাপত্তা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে দিল্লি ও উত্তরের রাজ্যগুলোতে। সন্ত্রাস-যোগসূত্র শনাক্ত করতে দ্রুত তদন্ত চলছে। উদ্ধারকারী ও গোয়েন্দা দল রাস্তা, পার্কিং-লট, সাধারণ জনসমাগম এলাকা আরও ঘনভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সাধারণ মানুষকে জনসাধারণ এলাকায় সন্দেহভাজন কর্মকাণ্ড দেখলে দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে।
