ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিলে, মানুষের বিরাগভাজন হলে কিছু করার নেই — তারেক রহমান

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা, ৭ অক্টোবর — বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভারত যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।” বাংলাদেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক ও কুটনৈতিক নীতি গড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবার আগে বাংলাদেশ” — এই নীতি বিএনপির করণীয় হবে।

সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে তিনি বিএনপির রাজনীতির পরিবর্তন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ও সংস্কার প্রশ্নে তার ভাবনা তুলে ধরেছেন। গত এক বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ভারতের সঙ্গে যেসব শীতলতা দেখা গিয়েছিল, সেসব ইস্যু নিয়েও কথা বলেছেন।


রাজনীতির পরিবর্তন ও দৃষ্টিভঙ্গি

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির রাজনীতির মূল অভিমুখ হলো মানুষের উন্নয়ন, তাদের দুঃখ-যন্ত্রণা শোনা ও রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন। রাজনৈতিক সংস্কার ও অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক মনোভাবকে জোরদার করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “পাঁচই আগস্টে আওয়ামী লীগ গঠিত সরকারের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং এখনও রয়েছেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এক ধরনের শীতলতার দিকে গিয়েছে — যাতায়াত, বাণিজ্য সব ক্ষেত্রে। সরকারে এলে আমরা এমন পরিবর্তন আনব কি না?” — এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি উত্তর দেন, “যদি তারা স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে আমাদের মানুষকে বিরাগভাজন করে, তাহলে আমরা কিছু করতে পারব না। আমাদের শীর্ষ লক্ষ্য হবে দেশের মানুষের সঙ্গে থাকতে।”


“সবার আগে বাংলাদেশ” — মূল কাঠামো

ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশকে বিশেষভাবে না উল্লেখ করে, তিনি বলেন, যে কোনো দেশে কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটাই নীতি — বাংলাদেশের স্বার্থ ও মানুষের কল্যাণ। “আমার কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ, মানুষের স্বার্থ, সার্বভৌমত্বই সবচেয়ে বড়,” — মন্তব্য করেছেন তিনি।

“গুড কোশ্চেন” বলে একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপির কূটনৈতিক নীতি একটাই — সবার আগে বাংলাদেশ। বাকি সবকিছু সেই নীতির মধ্যে রচনা করা হবে।”


ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক: কী হবে নতুন অধ্যায়?

তিনি বলেন, “ভারতকে বিশেষভাবে না, যে কোনো দেশ — আমাদের নীতি হবে ন্যায্য ও স্বাধীন। আমাদের দেশের অনুভূতি, আমাদের মানুষের সুরক্ষা, আমাদের স্বার্থ — এগুলো আগে দেখতে হবে।”

বিদেশের বিষয়ে উদাহরণস্বরূপ তিনি বললেন, “আমি আমার দেশের পানির হিস্যা চাই — আমার দেশের মানুষ যা পাওয়ার অধিকার রাখে, সেটি আমি চাই। পাশাপাশি, যদি কোনও ক্ষেত্রে মানুষের প্রতি যে আঘাত লাগে, যেমন সীমান্ত লাঙল বা হত্যাকাণ্ড — সেটি আমি মেনে নেব না।”

“দু’টি উদাহরণ দিয়েছি, একটি পানির হিস্যা ও একটি মানুষকে আঘাত — এ ধরনের ক্ষেত্রে আমি স্পষ্টভাবে বলেছি যে, আমার দেশের মানুষ যদি আঘাত পায়, আমি সেটিকে মেনে নেব না।”


গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ

তারেক রহমানের এ ধরনের বক্তব্য প্রাসঙ্গিক কারণ:

  • সীমান্ত ও জলসম্পদ ইস্যু: বাংলাদেশের জন্য পানির হিস্যা, নদী-নদীর সুষ্ঠু বন্টন ও সীমান্ত হত্যা-আক্ষিকা সবসময়ই গুল্ম জটিল ইস্যু।
  • কূটনীতি ও সাফল্য: প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা, এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক দক্ষতা দাবি করে।
  • জনমত ও রাষ্ট্রনেতৃত্ব: দেশের মানুষের অনুভূতি ও আস্থা অর্জন করতে রাজনৈতিক এবং নেতৃত্বগত সঙ্গতি অবশ্যক।

তবে বাস্তবায়ন এবং কূটনৈপুণ্য অনেক বড় পরীক্ষা — আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে শক্তি ও কৌশল বুঝতে হবে। দেশ ও মানুষের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রাখায় একদিকে অন্যদিকে দেশের সুপ্রতিষ্ঠন ও নিরাপত্তার ভার থাকবেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *