গাজাগামী ত্রাণবাহী নৌবহরে ইসরায়েলের হামলা, থুনবার্গসহ দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক আটক

ইসরায়েলি নৌবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গাজার তীরবর্তী জাহাজ ও আটক অনশনরত স্বেচ্ছাসেবক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা”-র একটি জাহাজে অভিযান চালায় ইসরায়েলি নৌবাহিনী, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবককে আটক করা হয়েছে। ছবি আল জাজিরা

অনলাইন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। এতে অন্তত ১৩টি জাহাজ জব্দ করা হয়েছে এবং আটক করা হয়েছে দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবককে। আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বখ্যাত পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ

কী ঘটেছে?

ফ্লোটিলার আয়োজকরা জানিয়েছেন, নৌবহরটি গাজার কাছাকাছি আসার পরেই ইসরায়েলি সেনারা হস্তক্ষেপ করে।
নৌবহরটি বুধবার রাতে গাজার উপকূল থেকে প্রায় ২২৫ কিলোমিটার দূরে পৌঁছেছিল। পরিকল্পনা ছিল বৃহস্পতিবার ভোরে গাজায় পৌঁছানোর। কিন্তু তার আগেই ইসরায়েলি নৌবাহিনী অভিযান চালায়।

কতজন আটক হয়েছেন?

ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আটক হওয়া জাহাজগুলোতে মোট ২০১ জনেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। এর মধ্যে শুধু স্পেন থেকেই ৩০ জন, ইতালি থেকে ২২ জন, তুরস্ক থেকে ২১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন ছিলেন।

কেন এ হামলা?

ইসরায়েলের দাবি, স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের ঘোষিত নৌঅবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছে, যা “আইনবিরুদ্ধ”।
অন্যদিকে আয়োজকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অধিকার রয়েছে। তাই এ হামলা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ফ্লোটিলার অবস্থান

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, যদিও কিছু জাহাজ জব্দ করা হয়েছে, তবুও প্রায় ৩০টি জাহাজ এখনও গাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তারা বলছে, অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতেই তাদের এই প্রচেষ্টা।

কেন জরুরি এই সহায়তা?

ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি সংকট তীব্র আকার নিয়েছে। অনেক অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এই নৌবহরের লক্ষ্য ছিল সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। স্পেন ও ইতালি তাদের আটক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

সারসংক্ষেপ

এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করছে যে গাজার অবরোধ শুধু রাজনৈতিক বা সামরিক বিষয় নয়—এটি একটি মানবিক সংকট। ফ্লোটিলার আয়োজকরা বলছেন, যত বাধাই আসুক না কেন, তাদের মিশন অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *