অনলাইন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আফগানিস্তানকে সরাসরি হুমকি দিলেন। তিনি বলেছেন, আফগানিস্তান যদি বাগরাম বিমান ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রকে ফেরত না দেয়, তবে “খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।”
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন— “যারা বাগরাম ঘাঁটি তৈরি করেছে, আফগানিস্তান যদি সেটা ফেরত না দেয়, তাহলে ভয়ংকর কিছু ঘটবে।”
বাগরাম ঘাঁটির ইতিহাস
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে প্রবেশ করে। তখন তারা বাগরাম বিমান ঘাঁটি তৈরি করে। প্রায় ২০ বছর মার্কিন সেনারা এই ঘাঁটি ব্যবহার করেছে।
কিন্তু ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর যুক্তরাষ্ট্র সেনারা হঠাৎ করেই আফগানিস্তান ছাড়ে। তখন কাবুলসহ বাগরাম ঘাঁটিও তাদের হাতছাড়া হয়। অনেক আফগান মনে করে— এটা ছিল মার্কিন সেনাদের পালিয়ে যাওয়া।
কেন আবার ঘাঁটি চাইছে আমেরিকা?
ট্রাম্প বলছেন, বাগরাম বিমান ঘাঁটি কৌশলগতভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি চীনের কাছাকাছি। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিনিময় ছাড়াই এই ঘাঁটি ছেড়ে এসেছিল। আর এখন সেটি ফেরত চাইছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও ট্রাম্প বলেন— ঘাঁটিটি ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। সাংবাদিকরা যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, “সেনা পাঠাবেন কি না?”— ট্রাম্প সরাসরি উত্তর দেননি। শুধু বলেছেন, “এখন আমরা সেটা নিয়ে কথা বলছি না।”
তালেবানের জবাব
তালেবান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা বাগরাম বিমান ঘাঁটি কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রকে দেবে না। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাকির জালালি বলেন— আফগানিস্তান আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে শর্ত হলো— আফগান মাটিতে কোনো মার্কিন সেনা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে।”
ভবিষ্যতে কী হতে পারে?
বিশ্লেষকরা মনে করছেন— এই ইস্যুতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র চায় ঘাঁটি ফেরত পেতে, অন্যদিকে তালেবান বলছে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তারা কোনো ছাড় দেবে না।
যদি যুক্তরাষ্ট্র জোর করে ঘাঁটি নিতে চায়, তাহলে আফগানিস্তানে আবারও সংঘাত শুরু হতে পারে। আর এতে গোটা অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
