বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ালো ৩১.৫০ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভবনের সামনে একজন মোবাইল ফোনে “সহজক্যাশ” অ্যাপ দেখছেন সহজক্যাশ’ নামে কোনো প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক লেনদেনের অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক, ছবি সংগ্রহীত

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ — দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ৩১.৫০ বিলিয়ন ডলার এ পৌঁছেছে।
এ তথ্য আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশ করা হয়।

তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর ব্যাল্যান্স অব পেমেন্টস ও ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (BPM6) পদ্ধতির আলোকে যদি মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে সেই রিজার্ভ মাপা হয় ২৬.৬২ বিলিয়ন ডলার

এই দুই সংখ্যার পার্থক্য অর্থনীতিতে গুরুত্ব বহন করে — একটি হলো රিজার্ভের “গ্রস (মোট)” মান, আর BPM6 পদ্ধতিতে মাপে “নেট” বা দায়–ঝামেলা বাদ দিয়ে শুদ্ধ অবস্থান।


এই তথ্যের প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ

রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ

  • প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স): বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা দেশে পাঠানো অর্থ রিজার্ভ বাড়াতে সহায়ক।
  • রপ্তানি আয় বৃদ্ধি: পোশাক ও তৈরি পণ্যের রপ্তানি আয় বেশি হলে মুদ্রা প্রবাহ বাড়ে।
  • আর্থিক ও বাজেটীয় কর্মকাণ্ড: সরকারি ঋণ, ঋণ-সহায়তা, বিদেশি সাহায্য এবং অন্যান্য অর্থনীতিক ক্রিয়াকলাপ রিজার্ভকে প্রভাবিত করে।
  • মুদ্রা ব্যবস্থাপনা নীতি: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কখনো কখনো মুদ্রা বিক্রি বা কেনা করে মুদ্রা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

পার্থক্য কেন?

  • গ্রস রিজার্ভ = সমস্ত বৈদেশিক সম্পদ (স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা, SDR, আন্তর্জাতিক সংস্থার দেনা)
  • নেট রিজার্ভ (BPM6 পদ্ধতি অনুযায়ী) = গ্রস রিজার্ভ থেকে ক্ষুদ্র মেয়াদী দায় (short-term liabilities) বাদ দিলে যা থাকে
  • অর্থাৎ, BPM6 সংখ্যা হলো দেশের “বাস্তব” দৃষ্টিকোণ থেকে অধিক নির্ভরযোগ্য মান

প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ

  • রিজার্ভ বেশি হলে দেশের আয়াত ও বাণিজ্য ব্যয় মেটাতে সক্ষমতা ভালো হবে
  • মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে রিজার্ভ অনেকটা “বাধা” হিসেবে কাজ করে
  • তবে খুব বেশি রিজার্ভ মানেই সবকিছু ঠিক থাকবে, না — ভালো ব্যবস্থাপনা ও দায়বদ্ধ নীতি জরুরি
  • যদি দায় বেশি হয়, তখন নেট রিজার্ভ কম হবে, যা অর্থনীতির দুর্বল দিক তুলে ধরতে পারে

বর্তমানে, বাংলাদেশের রিজার্ভ ৩১.৫০ বিলিয়ন ডলার হিসেবে ঘোষণা করা হলেও আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী (BPM6) শুদ্ধ মাত্রা ২৬.৬২ বিলিয়ন ডলার ধরা হচ্ছে।
এই তথ্য অর্থনীতির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ — কারণ শুধু রিজার্ভের “গোল-মাখা” সংখ্যা নয়, বরং দায়বদ্ধ ও বাস্তবিক অবস্থাও গুরুত্ব বহন করে।
আগামীদিনগুলোতে রিজার্ভের দিক পরিবর্তন, মুদ্রানীতি ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিষয়গুলোই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সুসংহত রাখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *