অনলাইন ডেস্ক:
রোববার (৫ অক্টোবর) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কথা বললেন সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ। তিনি জানান যে, “জুলাই সনদ” বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলো আস্তে আস্তে তাদের আগের অবস্থান থেকে সরে আসছে। অর্থাৎ, দলগুলোর মধ্যে অনেকেই এখন সনদ চূড়ান্ত করার ব্যাপারে একমত হওয়ার পথে।
ড. রীয়াজ বলেন, “দলগত অবস্থান থেকে সরে এসে একমত হচ্ছে অনেক দল। আশা করি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত সনদ সরকারের কাছে দিতে পারব।” তিনি আরও যোগ করেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, ১৫ অক্টোবরের পর আর সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।”
সনদ নিয়ে এখন পর্যন্ত কয়েকটি বিষয় ছিল বিতর্কিত — তার মধ্যে অন্যতম বিচার বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার ধারা। অনেক দল আগে দাবি করেছিল, সনদ প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের পরামর্শ থাকা প্রয়োজন। তবে বর্তমান আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, কিছু দল বলছে, হয়তো সে পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন নাও থাকতে পারে।
ড. রীয়াজ আরও জানিয়েছেন যে, আইন ও সাংবিধানিক বৈধতা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বললেন, “আইনসভাকে একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য দেওয়া দরকার, যাতে সংস্কার টেকসই হয় — এ বিষয়ে একটি কার্যত ঐকমত্য হয়েছে।”
একাধিক দলের ক্ষেত্রে এখন মৌলিক নির্ধারণে পার্থক্য কমে এসেছে — এটি কমিশনের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। ড. রীয়াজ বললেন, “সার্বিকভাবে জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য গণভোট আয়োজনের বিষয়েও সব দল একমত হয়েছে — এটি একটি বড় অর্জন।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। প্রয়োজনে তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার মতবিনিময় করবেন।
ঢাকা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো ইতিমধ্যে এই অগ্রগতির খবরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। কমিশনের কর্মী এবং দলের প্রতিনিধিরা সভা আলোচনা করছেন, খসড়ার বিভিন্ন ধরণ পর্যালোচনা করছেন যাতে সবাই মিলে এমন একটি সনদ তৈরি করা যায় যা আইন ও সংবিধান উভয় দিক থেকেই শক্ত ভিত্তিতে থাকবে।
বিশ্লেষণ ও প্রভাব
এই অগ্রগতি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। কারণ, এমন একটি ক্ষেত্রে যেখানে বেশির ভাগ বড় দল প্রাথমিকভাবে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল, সেখানে ধাপে ধাপে সরে এসে একমত হওয়া নির্দেশ দেয় যে আলোচনা ও সমন্বয় শক্তিশালী ভূমিকা নিতে পারে।
যদি ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই সনদ চূড়ান্ত হয়, তাহলে পরবর্তী ধাপ হবে সনদের রূপায়ণ ও আইনগত দিক থেকে তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করা। জনগণের অভিমত ও সমর্থন পাওয়া সেটাও গুরুত্বপূর্ণ — তাই গণভোট বা জনসংহতি মাধ্যম হিসেবে থাকছে আলোচনায়।
তবে চ্যালেঞ্জ এখনও আছে — কিছু অনুচ্ছেদ ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে সমন্বয় হয়নি, বিশেষ করে বিচার বিভাগের পরামর্শের বিষয়। যদি এই বিষয়ে সমন্বয় না হওয়া যায়, তা কোর কাঠামোয় সমস্যার কারণ হতে পারে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে — দলের স্বার্থ ও নীতি বজায় রেখে কীভাবে সমন্বয় করা যায়, এবং কবে সনদ চূড়ান্ত হবে।
