খাগড়াছড়ির নামে নেপালের ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি: ফ্যাক্টওয়াচ

নেপালের আন্দোলনের ভিডিওকে খাগড়াছড়ির বলে প্রচার, ফ্যাক্টওয়াচের তদন্তে উদঘাটন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো তিনটি ভিডিও খাগড়াছড়ির নয়, নেপালের সাম্প্রতিক আন্দোলনের দৃশ্য—ফ্যাক্টওয়াচ।

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি একটি আলোচনার ঝড় তুলেছে কয়েকটি ভিডিও। দাবি করা হচ্ছিল—এসব ভিডিও বাংলাদেশে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে অস্থিরতার সময় ধারণ করা। কিন্তু সত্যতা যাচাই করে দেখা যায়, ভিডিওগুলো মোটেও বাংলাদেশের নয়। এগুলো মূলত নেপালের সাম্প্রতিক আন্দোলনের ফুটেজ। বিষয়টি তদন্ত করে শনাক্ত করেছে স্বনামধন্য ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা ফ্যাক্টওয়াচ


ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ফ্যাক্টওয়াচ হলো লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা, যা পরিচালনা করে Center for Critical and Qualitative Studies (CQS)
সংস্থাটি জানায়, খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনটি ভিডিও ছড়ানো হয়।

  • দুটি ভিডিওতে দেখা যায় তরুণরা অস্ত্র হাতে দৌড়ঝাঁপ করছে।
  • অপর ভিডিওতে শতাধিক তরুণ পালিয়ে যাচ্ছে।

তবে গভীর অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়, ভিডিওগুলো বাংলাদেশের নয়। এগুলো আসলে নেপালের সাম্প্রতিক “জেনজি মুভমেন্ট” থেকে নেওয়া।


ভুয়া তথ্য ছড়ানোর উদ্দেশ্য

ফ্যাক্টওয়াচ দাবি করে, একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব ভিডিওকে খাগড়াছড়ির সঙ্গে যুক্ত করছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় জনগণের মাঝে ভীতি ছড়ানো এবং বিভ্রান্তি তৈরি করা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই এমন ভুয়া ভিডিও বা ছবির মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়। মানুষ তা যাচাই না করেই বিশ্বাস করে ফেলে, যা সমাজে অশান্তি তৈরি করতে পারে।


ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে ফ্যাক্টওয়াচের ভূমিকা

বর্তমানে বাংলাদেশে ভুয়া খবর, অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে ফ্যাক্টওয়াচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

  • তারা নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও, ছবি ও খবর যাচাই করে।
  • ভুয়া তথ্য শনাক্ত করে জনগণকে সঠিক তথ্য জানায়।
  • গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলছে।

গুজবের ক্ষতিকর প্রভাব

গুজব বা অপপ্রচার শুধু বিভ্রান্তি তৈরি করে না, অনেক সময় এটি সামাজিক অস্থিরতা ও সহিংসতার জন্ম দেয়

  • মিথ্যা তথ্যের কারণে মানুষ ভীত হয়ে পড়ে।
  • হঠাৎ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে।
  • একটি অঞ্চলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।

এই ধরনের পরিস্থিতি প্রতিরোধে ফ্যাক্ট-চেকিং উদ্যোগ যেমন ফ্যাক্টওয়াচের কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তা

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাই নয়, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো তথ্য দেখলেই সেটি যাচাই না করে শেয়ার করা উচিত নয়।
  • সন্দেহ হলে বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম বা ফ্যাক্ট-চেকিং প্ল্যাটফর্ম থেকে যাচাই করে নেওয়া উচিত।
  • তরুণ প্রজন্মকে তথ্য যাচাইয়ের কৌশল শেখানো দরকার।

ফ্যাক্টওয়াচ প্রমাণ করেছে যে, নেপালের ভিডিওকে খাগড়াছড়ির বলে প্রচার করা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। এই ঘটনা আবারও দেখাল—ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর ভিডিও কিভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *