টিআইবির দাবি ভুল: প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী ৬২ জন, প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

টিআইবির “১০০” দাবি ভিত্তিহীন: প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীর সংখ্যা তুলনায় কম ও কাজে কেন্দ্রিত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সফরে অংশ নেওয়া সদস্যদের সংখ্যা ও কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক দানা দেয়। ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গীর সংখ্যা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে দাবি করেছে, সেটি “ভিত্তিহীন” বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

টিআইবি সম্প্রতি বলেছিল, এবার প্রতিনিধি দলে “১০০ জনের বেশি” সদস্য রয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা ৬২ জন।


সরকারের বক্তব্য

প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “এই প্রতিনিধি দল অতীতের তুলনায় ছোট এবং অনেক বেশি মনোযোগী, কর্মঠ ও ফলাফলমুখী।”

তিনি আরও বলেন, “টিআইবি একটি সম্মানিত নাগরিক সমাজ সংগঠন। কিন্তু যাচাই করা তথ্যের বদলে গুজব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভুয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জনসমক্ষে বিবৃতি দেওয়া হতাশাজনক।”

প্রেস সচিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের প্রতিনিধি দলে ৬২ জন রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিরাপত্তা কর্মকর্তা, যারা প্রধান উপদেষ্টা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন।


তুলনামূলক চিত্র

গত বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিল ৫৭ জন। তবে ওই সংখ্যা ঘোষণার সময় প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে যাওয়া কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।

সরকার বলছে, এবারের দলেও অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় কেউ নেই। বরং দলের অনেক সদস্য আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রোহিঙ্গা সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।


সফরের উদ্দেশ্য

শফিকুল আলম বলেন, “জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক আসর। এখানে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ তুলে ধরতেই এই সফর।”

তিনি আরও জানান, প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে এক ডজনের বেশি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে। এর মধ্যে ছয়টির বেশি ছিল রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা।


রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

প্রেস সচিব অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।

এছাড়া দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদেরও এ সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এতে বোঝা যায়, সরকার শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


প্রধান উপদেষ্টার সফরকে ঘিরে প্রতিনিধি দলের আকার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। টিআইবি যেখানে বলছে সংখ্যা ১০০-এর বেশি, সেখানে সরকার বলছে আসল সংখ্যা মাত্র ৬২।

এ নিয়ে মতভেদ থাকলেও সরকারের দাবি হলো, এই প্রতিনিধি দল কার্যকর, মনোযোগী এবং দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *