অনলাইন ডেস্ক:
চট্টগ্রাম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ :
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ২০৫ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে সিএমপি’র ডিবি (উত্তর-দক্ষিণ) বিভাগ। রোববার রাতে পরিচালিত এ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবি উত্তর-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান।
অভিযানের বিস্তারিত
ডিবি পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার জেলার দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন—কক্সবাজার জেলার চকরিয়া পৌরসভার নিজুমপানখালী এলাকার শাজাহান (৪৪) এবং কক্সবাজার সদর থানা দক্ষিণ হালিমাপাড়া এলাকার মো. জাবের (২০)।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে তারা কম দামে ইয়াবা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে এনে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
মাদক ব্যবসার পটভূমি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, গ্রেফতার শাজাহানের বিরুদ্ধে পূর্বেও মাদক মামলা রয়েছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় তার নামে মাদক সংক্রান্ত রেকর্ড পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অপরদিকে, তরুণ জাবের সম্প্রতি মাদক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইনি ব্যবস্থা
গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার সকালে আসামিদের চট্টগ্রামের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সহযোগীদেরও শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
সামাজিক প্রভাব
বাংলাদেশে ইয়াবা একটি ভয়াবহ মাদক হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকা থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ইয়াবার সরবরাহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালালেও মাদক চক্র নতুন নতুন কৌশলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধু আইন প্রয়োগ নয়, সামাজিক সচেতনতা এবং পরিবারভিত্তিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
ডিবি পুলিশের অবস্থান
ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে তাদের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে। শহরের প্রতিটি এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যেসব মাদক চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
চট্টগ্রামে ১ হাজার ২০৫ পিস ইয়াবাসহ দুই কারবারির গ্রেফতার প্রমাণ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় জড়িতদের চিহ্নিত ও আটক করছে। তবে মাদক নিয়ন্ত্রণে টেকসই সমাধান আসতে হলে প্রশাসনিক পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা অপরিহার্য।
