রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো ঘটনায় মসজিদের ইমামসহ গ্রেফতার ১৮

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাটে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার দরবারে সহিংসতা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মসজিদের ইমামও রয়েছেন

অনলঅইন ডেস্ক:

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাট এলাকায় নুরাল পাগলার দরবারকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনাবলীর জেরে এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামও রয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।

ঘটনার পটভূমি

গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরাল পাগলার দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ওই সময় নুরাল পাগলার ভক্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত এবং দুই পক্ষের অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়।

সহিংসতার সময় শুধু শারীরিক ক্ষতিই হয়নি, বরং দরবারের সম্পদ লুটপাট করা হয়। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ছিল কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ উত্তোলন করে পুড়িয়ে ফেলা। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

গ্রেফতার অভিযান ও ইমামের আটক

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর বার্তায় জানানো হয়, সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম স্থানীয় মসজিদের ইমাম লতিফ হুজুর। তিনি ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। পুলিশ ভোরে মানিকগঞ্জের চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

মামলা দায়ের

নিহত ব্যক্তির বাবা মো. আজাদ মোল্লা (৫৫) বাদী হয়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়— পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, মাজার ভাঙচুর, লাশ উত্তোলন, পুড়িয়ে ফেলা, সম্পদ লুটপাট এবং হামলার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

সহিংসতার পরিণতি

রাজবাড়ীর এ ঘটনা শুধু স্থানীয় এলাকাতেই নয়, বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয় স্থাপনা ও কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয় হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোয়ালন্দঘাট এলাকায় বাড়তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রশাসনের অবস্থান

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতার সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে স্থানীয়দের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *