
ছবি সংগ্রহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা, ২২ আগস্ট ২০২৫
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের তালিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় সরকার তালিকাটি পুনর্বিবেচনার উদ্যোগ নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম গেজেটে ৮৩৪ জন শহীদের নাম প্রকাশ করা হয়। পরে জুন মাসে আরও ১০ জন যুক্ত হয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৪৪। তবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তালিকা থেকে আটজন বাদ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনের নাম দ্বৈতভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল এবং চারজন সরাসরি জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এর ফলে বর্তমানে শহীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৩৬।
আহতদের তালিকাতেও অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, প্রকৃত আন্দোলনকারীর বাইরে অন্য কেউ কেউ ভুলক্রমে বা প্রভাব খাটিয়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দেওয়া তালিকা থেকে ১৯ জনের নাম ইতোমধ্যে বাদ দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকজনের নাম যাচাইয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
বিশেষ করে যশোরের হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৪ জনকে শহীদ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। কেউ বলছেন, তাঁরা আন্দোলনের অংশ ছিলেন, আবার কেউ বলছেন তাঁরা ছিলেন না। এ নিয়ে যশোর জেলা প্রশাসককে আলাদা করে যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যে প্রকৃত শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান শুরু করেছে। শহীদ পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা (যার মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে) এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তবে যশোরে নিহত ২৪ জনের পরিবারকে সঞ্চয়পত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, যদিও জেলা পরিষদ থেকে দুই লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) এই যাচাই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি মনে করছে, সঠিক যাচাই নিশ্চিত হলে প্রকৃত শহীদ ও আহতদের মর্যাদা সংরক্ষিত হবে এবং ভবিষ্যতে এ নিয়ে আর কোনো বিতর্ক থাকবে না।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে যাচাই প্রতিবেদন পাওয়ার পর শিগগিরই সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
