
যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি ক্রয়াদেশে সরব বাংলাদেশের পোশাকশিল্প
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে বাড়তি ক্রয়াদেশ আসতে শুরু করেছে। ভারত ও চীনে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সেসব বাজার থেকে অর্ডার সরিয়ে আনছে মার্কিন ক্রেতারা।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কাজে লাগাতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণ করছে ভারতীয় ও চীনা বিনিয়োগকারীরাও। ভারতের বড় রপ্তানিকারকেরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষ পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, আর চীনা বিনিয়োগকারীরা নতুন কারখানা স্থাপনের চুক্তি করছে।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “সব উৎপাদক দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে ক্রেতারা বিকল্প বাজার খুঁজছে। ভোক্তারা শুল্ক মেনে নিতে পারলে ক্রয়াদেশ আরও বাড়বে।” তিনি আরও জানান, ভারতের বাজারে সক্রিয় কিন্তু বাংলাদেশে কাজ না করা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার সুযোগ নিতে হবে।
দেশের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, “এক মার্কিন ক্রেতার জন্য গত বছর ৭ লাইনে জ্যাকেট উৎপাদন করেছিলাম। এবার তাদের বাড়তি অর্ডারের জন্য ১৭ লাইন প্রয়োজন হবে। অন্য একটি ক্রেতার জন্যও উৎপাদন লাইন বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে।” তিনি আশা করছেন, সবকিছু অনুকূলে থাকলে চলতি অর্থবছরে রপ্তানি ৩৫ কোটি ডলার ছাড়াবে।
স্প্যারো গ্রুপের এমডি শোভন ইসলাম জানান, ভারত ও চীন থেকে ক্রয়াদেশ সরিয়ে আনতে একাধিক মার্কিন ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা চলছে। “আগামী বসন্তের জন্য ৫-১০% এবং গ্রীষ্মের জন্য ১০-১৫% বাড়তি অর্ডার আছে,” তিনি জানান।
এদিকে, চীনের হান্ডা (বাংলাদেশ) গার্মেন্টস ও খাইশি গ্রুপ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় আট কোটি ডলারের বিনিয়োগে তৈরি পোশাক কারখানা স্থাপন করছে। বেপজার তথ্যমতে, গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত আটটি চীনা প্রতিষ্ঠান মোট ১৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করেছে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “চীনা বিনিয়োগ ইতিবাচক, কারণ তারা বিনিয়োগের পাশাপাশি ক্রেতাও আনবে। তবে বাড়তি ক্রয়াদেশ ধরে রাখতে ব্যাংক, জ্বালানি ও কাস্টমসের সহায়তা জরুরি।”